AdSense কি: কিভাবে গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করা যায়?

অনলাইনে টাকা আয় করার যত উপায় আছে তার মধ্যে গুগল এডসেন্স হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয়, কিন্তু সবার মনে কিছু প্রশ্ন জাগে যে, এটা কি সত্য বা আদৌ সম্ভব? আমি কি সবসময় এডসেন্স থেকে টাকা আয় করতে পারবো? আমি কি ওখান থেকে উপার্জিত টাকা দিয়ে আমার পরিবার সহ নিচের হাত খরচ চালিয়ে যেতে পারব? আজ এই সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি আপনাদের দেখাবে কিভাবে সফল ব্লগাররা তাদের ব্লগে Google AdSense হতে টাকা উপার্জন করছে?
AdSense কি: কিভাবে গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করা যায়?




Google AdSense কি এ বিষয় নিয়ে নতুন করে লিখার কিছু নেই, তবে কিভাবে কাজ করে এ বিষয়টি সবার কাছে পরিষ্কার নয়। এ পোষ্টটি লিখার আগে আমি বেশ কয়েকবার চিন্তা করেছিলাম যে, পোষ্টটি লিখব কি না? কারণ Google AdSense কি এ বিষয় সবাই জানে। তারপরও আমি প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করলাম। Google AdSense কি, কিভাবে কাজ করে, কিভাবে অনুমোদন করতে হয়, কিভাবে বেশী আয় করা যায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ইতোপূর্বে আমাদের ব্লগে বেশ কয়েকটি পোস্ট রয়েছে। আমার ব্লগের এডসেন্স সংক্রান্ত সবগুলো পোস্ট পড়লে Google AdSense বিষয়ে সকল নাড়ী-ভূড়ী নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।




অন-লাইন হতে টাকা আয় করার যত প্রন্থা আছে তার মধ্যে Google AdSense নিঃসন্দেহে সাবার শীর্ষে অবস্থান করছে। সব ধরনের ব্লগারই তাদের ব্লগে Google AdSense বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে চায়। কারণ AdSense এর আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপনের সাইজ এবং ডিজাইনের কারণে এটিকে সবাই পছন্দ করে। তাছাড়া Google AdSense হতে অর্জিত টাকা গুগল খুব বিশ্বস্ততার সাথে পরিশোধ করে। এ সব কারনে Google AdSense সবার শীর্ষে অবস্থান করছে।

Google AdSense কি?

সবাই নিশ্চয় জানেন যে, Google AdSense হচ্ছে ইন্টারনেট ভিত্তিক একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা যেটি গুগল নিজে পরিচালনা করছে। গুগল বিভিন্ন বিজ্ঞাপনি কোম্পানির কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে তাদের আওতাধীন যত ওয়েবসাইট আছে সেগুলোতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে আয় করে। গুগল AdSense বিজ্ঞাপন থেকে যত টাকা আয় করে তার ৬৮ ভাগ টাকা পাবলিশারদের দিয়ে থাকে এবং বাকী ৩২ ভাগ টাকা নিজেরা ভোগ করে। একটি উদাহরনের মাধ্যমে আমি বিষয়টি ক্লিয়ার করছি।

গুগল এডসেন্সের কাজ কি?

ধরুন আপনি সিলেটের হযরত শাহ্জালাল (রঃ) মাজার শরীফের আশপাশ এলাকায় একটি উন্নতমানের আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্ট চালু করলেন। যেহেতু সিলেট হচ্ছে একটি জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা, এখানে প্রতিদিন দেশে বিদেশ হতে হাজারো মানুষ ঘুরতে আসে এবং অধিকাংশ লোক রাতের বেলায় বিভিন্ন হোটেলে রাত্রিযাপন সহ খাওয়া দাওয়া করে। সেহেতু আপনি চাইবেন কিভাবে খুব দ্রুত আপনার হোটেল সম্পর্কে দেশ বিদেশের মানুষকে জানানো যায়। নতুন অবস্থায় স্বাভাবিক নিয়মে আপনার হোটেল ভালো হওয়া সত্বেও পরিচিতি না থাকার কারনে আপনার হোটেলে লোকজন আসবে না।

এখন দেশ বিদেশের মানুষকে আপনার হোটেলের গুনাগুন সম্পর্কে জানানোর জন্য আপনিত আর মানুষের দরজায় দরজায় গিয়ে সেটি বলতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রের আপনার প্রয়োজন হবে হোটেলের বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করা। এই বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য তখন আপনি গুগল এডসেন্স এর দ্বারস্থ হবেন। গুগল এডসেন্সকে আপনি বলবেন আমি এক লক্ষ টাকা দিব বিনিময়ে আমার হোটেলের বিজ্ঞাপনটি আগামী একমাস প্রচার করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে গুগল যেটা করবে সেটা হচ্ছে যে, গুগল তখন আপনার আমার ব্লগে ঐ হোটেলের বিজ্ঞাপন আগামী একমাস পর্যন্ত দেখাতে থাকবে। সেই হোটেলের বিজ্ঞাপন যখন আমাদের ব্লগে শো হবে তখন সেই হোটেলের নিকট থেকে প্রাপ্ত টাকার কিছু অংশ আমাদের দিয়ে দেবে। মূলত গুগল এডসেন্স এভাবে সারা বিশ্বে তাদের বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রন করে।
AdSense কি: কিভাবে গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করা যায়?
গুগল AdSense সাধারণত বিভিন্ন ধরনের Text, Link এবং Image আকারে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে থাকে। এ সব বিজ্ঞাপনে Per-Click এবং Per-Impression হিসাব করে পাবলিশারদের টাকা প্রদান করে থাকে। গুগল যত টাকা উপার্জন করে তার প্রায় ২৭ ভাগ আসে Google AdSense থেকে। এটি Publisher এর জন্য সম্পূর্ণ ফ্রি। আপনি যদি এর একজন পাবলিশার হতে চান তাহলে কোন টাকা ব্যয় করতে হবে না। আপনি খুব সহজে আপনার ব্লগে এই বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে ভালোমানের টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

কিভাবে AdSense ব্যবহার করতে হয়?

একটি ব্লগে গুগল এডসেন্স ব্যবহার করতে হলে প্রথমে AdSense এর সকল নিয়ম ও গাইডলাইন অনুসরন করে ব্লগ তৈরি করতঃ ব্লগে মিনিমাম ২০-২৫ ভালোমানের পোস্ট পাবলিশ করতে হয়। তারপর ব্লগে প্রতিদিন ১০০ টি ইউনিক ভিজিটর থাকলে আপনার ব্লগে এডসেন্স ব্যবহার করার জন্য আবেদন করবেন। গুগল এডসেন্স টিম আপনার আবেদনটি ৫/৭ দিনের মধ্যে রিভিউ করবে এবং ব্লগটি এডসেন্স এর উপযোগী হলে আবেদন অনুমোদন করবে। অনুমোদন করার পর আপনার ব্লগে এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন ব্যবহার করতে পারবেন এবং এডসেন্স থেকে টাকা উপার্জন করতে সক্ষম হবেন। তবে আবেদন অনুমোদন না করে বাতিল করে দিলে ব্লগে এডসেন্স ব্যবহার করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে কিছুদিন পর সবকিছু সমাধান করে আবার আবেদন করতে পারবেন।

এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়মঃ

আমি আগেই বলেছি এডসেন্স একাউন্ট খোলার জন্য বা গুগল এডসেন্স অনুমোদন পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে একটি মানসম্পন্ন ব্লগ বা ইউটিউব চ্যালেন প্রয়োজন হবে। আপনার যদি একটি ভালোমানের ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল থাকে তবে গুগল এডসেন্স এর ওয়েবসাইট একটি জিমেইল এড্রেস দিয়ে Sign Up করে Form Fill Up করতঃ একটি এডসেন্স একাউন্ট খোলার জন্য জন্য Apply করতে পারবেন।

তবে মনে রাখবেন এডসেন্স একাউন্ট খোলার জন্য আবেদন করার সাথে সাথে আপনার ব্লগে বা ইউটিউব চ্যানেলে এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন শো হবে না। গুগল এডসেন্স একাউন্ট খোলার আবেদন করার ৫/৭ দিনের মধ্যে গুগল আপনার ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেলটি যাচাই করবে। আপনার ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেলটি যাচাই করার পর তারা উপযুক্ত মনে করলে আপনার এডসেন্স একাউন্ট খোলার আবেদটি অনুমোদন করবে। কেবলমাত্র অনুমোদন হলে আপনার ব্লগে বা ইউটিউব চ্যানেলে এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে টাকা আয় করতে পারবেন। তবে আপনার ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেলটি ভালোমানের না হলে এডসেন্স আপনার আবেদন অনুমোদন না করে Reject করে দিবে। এ ক্ষেত্রে আপনি হতাশ না হয়ে ১৫/২০ দিন ব্লগে নতুন আর্টিকেল পাবলিশ করে ভিজিটর বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। তারপর ১৫/২০ দিন পর আপনি পুনরায় একটি এডসেন্স একাউন্ট খোলার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ইউটিউব এডসেন্স খোলার নিয়মঃ

ইউটিউব এডসেন্স একাউন্ট খোলার জন্য বা এডসেন্স এর আবেদন করার জন্য ইউটিউব  ভিডিও Monetization অপশন Enable করতে হয়। ইউটিউবে ভিডিও মনিটাইজ অপশন Enable করার জন্য আপনার চ্যালেনে এক হাজার সাবস্ক্রাইবার ও এক বছরে ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম এর মাইল ফলক অর্জন করতে হবে। ২০১৯ সালের পূর্বে এ রকম কোন শর্ত ছিল না কিন্তু ২০১৯ সাল হতে এখনো পর্যন্ত এই নিয়ম বলবৎ আছে। আপনার চ্যালেনে এক হাজার সাবস্ক্রাইবার ও এক বছরে ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম হওয়ার পর পূর্বের নিয়ম অনুসরণ করে একইভাবে একটি জিমেইল এড্রেস দিয়ে এডসেন্স একাউন্ট খুলতে পারবেন। তারপর সেই একই প্রসেসে অনুমোদন হলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন ব্যবহার করতে পারবেন।

কিভাবে Google AdSense কাজ করে?

Google AdSense এর একটি বিশালাকারে শাখা এবং ডেভেলপার টিম রয়েছে, যারা প্রতিনিয়ত এটিকে দিনে পর দিন ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি গুগল এডসেন্স বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের ক্ষেত্রে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স টেকনোলজি ব্যবহার করছে। 
কিভাবে Google AdSense কাজ করে?
গুগল সাধারণত প্রথমে একটি সাইটের যাবতীয় তথ্য এবং Cookies সংগ্রহ করে। তারপর বিশেষ পোগ্রামিং এবং JavaScript এর মাধ্যমে কন্টেন্ট এর উপর ডিপেন্ড করে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে থাকে। এ সব বিজ্ঞাপন পাবলিশারদের দুটি উপায়ে আয় করার সুযোগ দেয়। কিছু ওয়েবসাইটের জন্য কেবল যারা ঐ সাইটটি অপেন করে বিজ্ঞাপন দেখে এবং কিছু ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনে ক্লিক করার মাধ্যমে রেট ভিত্তিক টাকা প্রদান করে থাকে। তবে প্রত্যেকটি ব্লগ/ওয়েবসাইটের র্যাংকিং এর উপর ভিত্তি করে আলাদা আলাদা বিজ্ঞাপন দেখার এবং ক্লিক রেটও রয়েছে। তাছাড়া বিজ্ঞাপনের সাইজ ও ধরণ অনুযায়ীও বিজ্ঞাপনের ক্লিক রেট ভিন্ন হয়ে থাকে।

AdSense বিজ্ঞাপন ভিন্ন হয় কেন?

আমি আগেই বলেছি গুগল AdSense এর বিজ্ঞাপন বিশেষ কিছু পোগ্রামিং এর মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়, যাতেকরে এটি যে কোন সাইটকেই দেখতে আকর্ষণীয় করে তুলে। তাছাড়া এটি কোন ওয়েবসাইটের লোড টাইমের উপরও কোন প্রভাব ফেলবে না। যখন কোন ভিজিটর ব্লগের কোন একটি পোষ্ট ভিজিট করে, তখন সাথে সাথে গুগল AdSense Scripts সমস্ত পোষ্টের কন্টেন্ট স্ক্যান করে নেয় এবং কন্টেন্ট এর সাথে মিল রেখে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। অধীকন্তু কোন্ দেশ হতে সাইট ভিজিট করা হচ্ছে সেটিও জেনে নিয়ে ঐ দেশ এবং এলাকা ভিত্তিকও বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। যার দরুন দেখা যায় বাংলাদেশ থেকে ভিজিট করার পর গুগল AdSense বাংলাদেশের সকল প্রকার বিজ্ঞাপন শো করছে। আপনি যখন কোন সাইট ভারত থেকে ভিজিট করবেন তখন গুগল AdSense ভারতের বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন দেখাবে।

কিভাবে গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করা যায়?

Adsense বিজ্ঞাপন থেকে Google যত টাকা আয় করে তার ৬৮ ভাগ টাকাই দিয়ে থাকে পাবলিশারদের এবং বাকী ৩২ ভাগ টাকা নিজেরা ভোগ করে। কাজেই বুঝতে পারছেন আপনি কি পরিমানে টাকা আয় করতে পারবেন। Google Adsense থেকে টাকা আয় করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় নিম্নে সংক্ষেপে দেওয়া হলো -

১। একটি ভালোমানের ব্লগ/ওয়েবসাইটঃ

আপনার লেখালেখির অভ্যাস থাকলে একটি ব্লগ তৈরি করে ব্লগে আর্টিকেল শেয়ার করে খুব সহজে Google AdSense হতে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ব্লগ তৈরির বিষয়ে আপনার কোন অভীজ্ঞতা না থাকলে আমাদের ব্লগের BlogSpot দিয়ে ফ্রি ব্লগ তৈরি সংক্রান্ত পোস্টটি অনুসরন করে সম্পূর্ণ ফ্রিতে একটি ব্লগ ক্রিয়েট করে নিতে পারেন। আপনি যখন গুগল সার্চ ইঞ্জিনে কোন কীওয়ার্ড লিখে কিছু সার্চ করেন এবং সার্চ রেজাল্ট হতে একটি ব্লগে ভিজিট করেন তখন ঐ সমস্ত ব্লগে যে সমস্ত বিজ্ঞাপন দেখতে পান, সেগুলো বেশীরভাগ হচ্ছে গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন। ভালোমানের আর্টিকেল রাইটাররা তাদের ব্লগে শুধুমাত্র কন্টেন্ট শেয়ার করে AdSense হতে মাসে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করছে। আমি নিজেও আমার ব্লগে এডসেন্স বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে মাসে অল্পকিছূ টাকা আয় করছি। কাজেই ব্লগিং করে অনলাইন হতে দীর্ঘদিন যাবত টাকা ইনকাম করতে পারেন।

২। ভালোমানের কনটেন্টঃ

আমি সবসময় একটা কথাই বলে থাকি যে, আপনি যদি একজন ভালোমানের ব্লগার হতে চান তাহলে অবশ্যই ব্লগে মানসম্মত ও নিত্য নতুন আর্টিকেল পাবলিশ করেন। আপনি যে বিষয়টি ভালো জানেন ও বুঝেন সেই বিষয় নিয়ে কারও কাছ থেকে কপি পেষ্ট করা নয় এমন কন্টেন্ট পাবলিশ করেন। কারণ Google Adsense সব সময়ই নিত্য নতুন আর্টিকেল পাগলের মত পছন্দ করে। এক সময় ছিল যখন গুগল এডসেন্স বাংলা ভাষা সাপোর্ট করত না কিন্তু ২০১৭ সাল হতে এডসেন্স বাংলা ভাষা সাপোর্ট করছে এবং বাংলা কন্টেন্ট যুক্ত ব্লগে এডসেন্স অনুমোদ দিচ্ছে। কাজেই এডসেন্স থেকে টাকা উপার্জন করতে চাইলে এখন বাংলা কন্টেন্ট নিয়েও কাজ করতে পারেন।

৩। ভিজিটরঃ

আপনি যা কিছুই নিয়ে ব্লগিং করেন না কেন আপনার টার্গেট হচ্ছে ব্লগে ভিজিটর পাওয়া। আপনি যখন ব্লগে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর পাবেন তখনই আপনার এত পরিশ্রম সফল হবে। কারণ ভিজিটরহীন ব্লগ এর কোন মানেই হয় না। তাছাড়া Google Adsense হতে কি পরিমানে টাকা পাবেন তা নির্ভর করে করে ভিজিটরের উপর অর্থাৎ আপনার ব্লগে যত বেশী ভিজিটর আসবে আপনার আয়ও তত বাড়তে থাকবে।

৪। কীওয়ার্ড বাছাইঃ

ব্লগে বেশী পরিমানে ভিজিটর পাওয়ার জন্য Keyword বাছাই করতে হবে। আপনার ব্লগের কন্টেন্ট অনুযায়ী হাই কোয়ালিটির কীওয়ার্ড বাছাই করতে হবে। এতেকরে আপনার ব্লগে ভিজিটর বাড়ার পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের ক্লিক মূল্য বাড়বে। এ ক্ষেত্রে আপনি Google Keyword Planner Tool এর সাহায্য নিতে পারে। ওখান থেকে জানতে পারবেন আপনার ব্লগ রিলেটেড কোন কোন কীওয়ার্ড ব্যবহার করে ভিজিটর সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করছে এবং কোন কীওয়ার্ডগুলো হাই কোয়ালিটির। সেখান থেকে বেছে বেছে হাই কোয়ালিটির কীওয়ার্ডগুলো আপনার ব্লগে ব্যবহার করবেন।

৫। Google AdSense Policies:

আপনি হয়তো ভাবছেন যে, Google AdSense একাউন্ট আছে তাই যে কোন অসদ উপায় অবলম্বন করে আয় বাড়ীয়ে নেবেন। কিন্তু মনে রাখবেন Google AdSense একাউন্ট অনুমোদন করা যতটা না কঠিন, তার চেয়ে আরও কঠিন এটিকে ঠিকিয়ে রাখা। কারণ Google AdSense Policies পরিপন্থি কোন কাজ করলে আপনার Account টি যেকোন মুহুর্তে Disable হতে পারে। আর একবার Account টি Disable হলে আর কোন দিন তা একটিভ করতে পারবেন না। কাজেই AdSense এ Apply করার আগে এবং Approved করার পরে Google AdSense Policies ভালোভাবে পড়ে নিয়ে ১০০ ভাগ মেনে চলার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার একাউন্ট গুগলের কাছে বিশ্বস্ত হয়ে উঠবে এবং কোন দিনই Disable হবে না।

গুগল এডসেন্স থেকে কত টাকা আয় করা যায়?

এই প্রশ্নের জবাবে আমি বলবো যে, AdSense থেকে ১০০ ভাগ জীবন ধারন করা বা পরিবার চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ আপনি এখান থেকে সবসময় ভালোমানের টাকা ইনকাম করতে সক্ষম হবেন তার কোন নিশ্চয়তা নেই। দেখা যাবে হয়তো আপনি কোন মাসে বেশ কিছু টাকা আয় করতে সক্ষম হয়েছেন, আবার কোন মাসে সামান্য কিছু টাকা আয় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। তবে এটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি আপনার ব্লগটি যদি ভালোমানের হয়, ভাল কোয়ালিটির কন্টেন্ট থাকে এবং প্রচুর পরিমানে ভিজিটর থাকে তাহলে এখান থেকে প্রতিনিয়তই একটা Smart Amount আয় করতে সক্ষম হবেন। যা দ্বারা আপনার পরিবার পরিচালনা করতে সক্ষম না হলেও অনেকাংশেই সহায়তা করবে।

গুগল এডসেন্স এর চিঠি কিভাবে হাতে পাবেন?

সাধারণত এডসেন্সে যখন আপনার ইনকাম ১০ ডলার পূর্ণ হবে তখন গুগল এডসেন্স টিম আপনার ঠিকানা, ব্যাংক একাউন্ট ও গুগল এডসেন্স একাউন্ট ভেরিফিকেশন করে নেওয়ার জন্য বলবে। আপনি যখন এডসেন্স এর সেটিংস অপশন হতে আপনার ঠিকানা, ব্যাংক একাউন্ট ও এডসেন্স একাউন্ট ভেরিফিকেশন করার জন্য আবেদন করবেন তখন গুগল আপনার স্থানীয় ঠিকানার পোস্ট অফিসে একটি চিঠি পাঠাবে। সেই চিঠিতে গুগল এডসেন্স এর অফিসিয়াল সীলমোহর করা থাকবে। এডসেন্স এর চিঠি খোলার পর আপনি একটি পিন নম্বর দেখতে পাবেন। উক্ত পিন নম্বরটি ব্যবহার করে আপনার ঠিকানা, ব্যাংক একাউন্ট ও এডসেন্স একাউন্ট ভেরিফিকেশন করে নিতে পারবেন।

এডসেন্স থেকে টাকা তোলার পদ্ধতিঃ

গুগল এডসেন্সে যখন আপনার ইনকাম ১০০ ডলার পূর্ণ হবে তখন আপনি সেই টাকা উত্তোলন করার অপশন পাবেন। গুগল এডসেন্স একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলনের আবেদন করার পর গুগল আপনার টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়ে দেবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সেই টাকা আপনার কাঙ্খিত ভেরিফাই করা ব্যাংক একাউন্টে পাঠাবে। ভারতের ক্ষেত্রে সম্ভবত সেই রুপি SBI এর মাধ্যমে কাঙ্খিত ব্যাংকে পৌছে দেয়।

আমাদের শেষ কথাঃ

উপরের বিশেষ গুনের কারনে গুগল AdSense বিজ্ঞাপন দাতা এবং পাবলিশারদের মন জয় করে নিয়ে সাবার শীর্ষে অবস্থান করছে। কারণ এলাকা ভিত্তিক বিজ্ঞাপন শো করার কারনে বিজ্ঞাপন দাতাদের বিশেষ সুবিধা হয়। অন্যদিকে যারা ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করেন তাদের সাইটে কোন প্রকার লোড টাইমের প্রভাব না করার কারনে তারাও পছন্দ করে। তাছাড়াও গুগল AdSense হতে উপার্জিত টাকা বিশ্বস্তাতার সাথে পরিশোধ করার কারনে সকল ধরনের বিজ্ঞাপনী সংস্থার শীর্ষে রয়েছে।

যেহেতু AdSense অনলাইন থেকে টাকা আয়ের সবচেয়ে বড় এবং বিশ্বস্ত একটি মাধ্যম, সেহেতু আমার মনে হয় আপনি ব্লগিংকে পেশা হিসেবে না নিলেও সখ হিসেবে ব্যবহার করে সামান্য কিছু সময় ব্যয় করে খুব বেশী না হলেও অল্প কিছু টাকা আয় করতে পারবেন। যা আপনার লেখা-পড়া কিংবা পেশার পাশাপাশি সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

0 Response to "AdSense কি: কিভাবে গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করা যায়?"

Post a Comment